Wednesday, October 17, 2018

“আল-ফাতিহা” (তাফসির আল শারাওয়ী)

ইমাম শারাওয়ী খুবই উচুমানের আলেম ছিলেন। তাফসিরের জন্য তো অনন্য ছিলেন।
সহজ, যুগোপযোগী, জীবনঘনিষ্ঠতা, আয়াত ও সূরার শৃঙ্খলাপূর্ণ ধারাবাহিকতা, চাতুর্মুখিক জ্ঞানের আলোকে প্রতিটি আয়াতকে ব্যাখ্যা করে আমাদের অন্তরের রুহানি পুষ্টি তৈরি করেছেন।
বাংলাভাষায় একটি পরিবর্তনের সূচনা করবে তাফসিরের ক্ষেত্রে। আনবে গভীরতা ও নতুনত্ব।
এক.
আল্লাহকে প্রাথমিকভাবে চেনা, ভালোবাসা ও সুন্দররূপে ইবাদাহ করার জন্য যেটির সাথে সর্বপ্রথম পরিচয় দরকার সেটি হল সূরা আল-ফাতিহা (রব, আর-রাহমান, আর-রাহীম ও প্রতিদান দিবসের মালিক)। অথচ আমরা বেশিরভাগ সময়েই অন্যের কাছে আল্লাহর ভিন্ন পরিচয় উপস্থাপন করি, ভিন্ন তথ্য দিয়ে। পুরো বইটি আমাদের শুধু সূরা ফাতিহার সাথে অনন্য অসাধারণভাবে পরিচিত করাবে ইন-শা-আল্লাহ।
দুই.
বিজ্ঞানের অপব্যাখ্যা, দর্শনসমস্যার বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাখ্যা এবং আধুনিক ভোগবাদিতার মুখোস উন্মোচন করে এমনভাবে চাক্ষুস উদাহরণ দেয়া হয়েছে এখানে যা থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য ব্যাখ্যার সুযোগ থাকে না। ফলে আধুনিক মননের চিকিৎসায় এই তাফসির কাজ করবে নিরাময়ক হিসেবে।
তিন.আল-কুরআন পড়তে ভালো না লাগার অন্যতম একটি কারণ হলো আল-কুরআনকে খাপছাড়া ও বিশৃংখল মনে হয়, এলোমেলো মনে হয় আয়াত ও সুরাগুলোকে। অথচ এটি ভুল ধারণা। আল-কুরআনে রয়েছে আয়াত ও সূরাসমূহের মাঝে ধারাবাহিক সুশৃংখলা, রয়েছে ধারাবাহিক অর্থপূর্ণতা। ফলে এই তাফসির পড়তে গিয়ে আপনার কাছে আল-কুরআনকে পড়তে-বুঝতে আর নিরসভাব-বিশৃংখল-এলেমেলো-খাপছাড়া মনে হবে না ইন-শা-আল্লাহ।
চার.
আর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর জীবনঘনিষ্ঠতা। আল-কুরআন যদি আমার জীবনের সমস্যা নিয়ে না কথা বলে, আমার কথা না বলে, আমার প্রয়োজনের সমস্যার সমাধান না দেয়, কেবল তাত্ত্বিক কথা বলে, তবে আমি কেন পড়বো এটি? এখানেই এই তাফসিরের অন্যতম সফলতা ‒ যুগোপযোগীতা ও জীবনঘনিষ্ঠতা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়।”
//তাফসির গ্রন্থ বিবরণী
বইঃ আল-ফাতিহা (তাফসির আল-শারাওয়ী, ১ম খন্ড)
মূলঃ ইমাম মুতওয়াল্লী আল-শারাওয়ী (রাহিমাহুল্লাহ)
অনুবাদকঃ আহমাদ আল-সাবা
মোট পেইজঃ ১৬০, পেপার ঈষৎ ইয়েলো।//



তাফসির আল-শারাওয়ী এর রচয়িতা ইমাম আল-শারাওয়ী (রাহিমাহুল্লাহ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী , শিক্ষা ও অবদান
মিশরীয় আলেম ইমাম আশ-শারাওয়ী (রাহিমাহুল্লাহ), যিনি কাব্য ও আরবী সাহিত্যে ছিলেন অনন্য। মাত্র ১১ বছর বয়সে সম্পূর্ণ আল-কুরআন হেফজ করেন।
পড়াশোনা করেছিলেন আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পড়িয়েছেন আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আল-আযহারের গ্র্যান্ড মুফতি ছিলেন। ছিলেন তানতা ইনস্টিটিউটের দাওয়াহ বিভাগের ডিরেক্টর। তিনি সৌদি আরবে হাজ্জ্বীদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিতেন। মিশরের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান থাকাবস্থায় তাঁর বড় অবদান ছিলো মিশরে প্রথম (১৯৭৯) ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা ।

তিনি আল-কুরআনের ব্যাখ্যার ওপর একটি টেলিভিশন প্রোগ্রাম (নুরুন আলা নুর) শুরু করেন নিয়মিত, আরবী ভাষী ৭০ মিলিয়ন (৭ কোটি) লোক তাকে নিয়মিত দেখতেন তাঁর সহজবোধ্য অথচ জীবনঘনিষ্ঠ আল-কুরআনের আলোচনাগুলো।

আল-কুরআনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা, মমতা ও গভীর জ্ঞানের লেভেল কতটুকু ছিলো? এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ১৯৯৭ সালে একবার গর্ব করে বলেনঃ “১৯৪৩ সাল থেকে আমি আল-কুরআন ছাড়া আর কোনো বই পড়ি নি” (একাধারে ৫৫ বছর)। তিনি তাঁর গ্রামের শিক্ষা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন এবং ৬০ বছর বয়স্ক হওয়ার আগে তিনি আল-কুরআনের তাফসির শুরু করার সাহস করেন নি।
ইমাম শারাওয়ী (রাহিমাহুল্লাহ) এর কুরআন ব্যাখ্যার পদ্ধতি কয়েকটি উৎসের উপর নির্ভরশীল ছিলেন।

প্রথমত, তিনি আরবী ভাষা ও এর সুক্ষ্ণতার পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানের উপর নির্ভর করেন।
দ্বিতীয়ত, কুর’আনের সমগ্র বাণীকে সামষ্টিক জ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা দিতেন।
তৃতীয়ত, তিনি পবিত্র কুরআনের আয়াতগুলোর প্রাত্যহিক জীবনে বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন এবং এগুলোর সামাজিক ব্যবহারের উপর নজর দিতেন।
আর বিজ্ঞান ও দর্শন চিন্তার অপব্যবহারগুলোকে সমস্ত মানুষের আকলের উপযোগী করে শুধরিয়ে দেওয়া তাঁর অন্যতম একটি অনন্যতা।

যোগাযোগ ঠিকানাঃ
Bookish Publisher (বুকিশ পাবলিশার)
মোবাইলেঃ 01645261821
ফেইসবুকঃ https://www.facebook.com/bookishpublisher/